Jump to ratings and reviews
Rate this book

গান্ধর্বী

Rate this book
চলচ্চিত্রে-রূপায়িত তাঁর ‘শ্বেতপাথরের থালা’ উপন্যাসটির সুবাদে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মুখে-মুখে এখন বাণী বসুর নাম। তবে বাংলা সাহিত্যের যাঁরা নিয়মিত পাঠক, তাঁরা অবশ্য আগে থেকেই জেনে নিয়েছেন যে, ঔপন্যাসিক হিসেবে কী প্রবল শক্তিমত্তা নিয়ে আবির্ভাব বাণী বসুর| নভেলেট নয়, এযুগে যা বিরল সেই ধ্রুপদী রীতির উপন্যাসই লেখেন বাণী বসু। দুরন্ত নিটোল একটি মূলকাহিনীর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মিশিয়ে দেন দারুণ কৌতূহলকর কিছু উপকাহিনী। যেমন এই ‘গান্ধর্বী’। সুরলোকের পটভূমিকায় লেখা এই উপন্যাসের কেন্দ্রে অপালা নামের দেবদত্ত কণ্ঠের অধিকারিণী এক নারী—তাঁর সাধনা ও সংগ্রাম, গান্ধর্বী প্রকৃতি ও মানবী হৃদয়বৃত্তির মর্মন্তুদ দ্বন্দ্ব। এরই পাশাপাশি রামেশ্বর ঠাকুর ও মিতশ্রীর, সোহম ও দীপালির, সিতারা ও জাঁপোলমাসোর, রননা ও সুমন কাপুরের স্বয়ম্প্রভ উপকাহিনী। এক অনুপম মুনশীয়ানায় সেই সমূহ কাহিনীকে এ-উপন্যাসের ধ্রুব পদে মিলিয়ে দিয়েছেন বাণী বসু।

188 pages, Hardcover

First published January 1, 1993

About the author

Bani Basu

88 books103 followers
Bani Basu is a Bengali Indian author, essayist, critic and poet. She was educated at the well-known Scottish Church College and at the University of Calcutta.

She began her career as a novelist with the publication of Janmabhoomi Matribhoomi. A prolific writer, her novels have been regularly published in Desh, the premier literary journal of Bengal. Her major works include Swet Patharer Thaala (The Marble Salver), Ekushe Paa (twenty One Steps), Maitreya Jataka (published as The Birth of the Maitreya by Stree), Gandharvi, Pancham Purush (The Fifth Man, or Fifth Generation?) and Ashtam Garbha (The Eighth Pregnancy). She was awarded the Tarashankar Award for Antarghaat (Treason), and the Ananda Purashkar for Maitreya Jataka. She is also the recipient of the Sushila Devi Birla Award and the Sahitya Setu Puraskar. She translates extensively into Bangla and writes essays, short stories and poetry.

Bani Basu has been conferred upon Sahitya Academy Award 2010, one of India's highest literary awards, for her contribution to Bengali literature.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
123 (51%)
4 stars
86 (35%)
3 stars
28 (11%)
2 stars
3 (1%)
1 star
1 (<1%)
Displaying 1 - 29 of 29 reviews
Profile Image for রিফাত সানজিদা.
172 reviews1,191 followers
August 19, 2016
ছুটির এক দুপুরে লেখাপড়া করতে বসেছিলাম। বিষয়ের গালভরা নাম, 'পাবলিক পারসোনেল ম্যানেজমেন্ট'।
যত্তসব!

বিচিত্র কারণে এবং প্রায় অকারণে মাঝপথে হঠাৎ যে প্রিয় পুস্তকটির নাম মনে পড়লো, তার নাম গান্ধর্বী, লেখিকার নাম বাণী বসু।
তারপরের কাহিনি সিম্পল। পাঠ্যর পাতা মুড়ে রেখে অপাঠ্য বইখানা নেট ঢুঁড়ে নামানো এবং পুনঃপাঠ শুরু।
পাঠক হিসাবে আমার গতি ভাল। সময় খুব বেশি লাগে না। :)

মানুষের যা কিছু নান্দনিক ক্ষমতা এবং বাসনা তার জন্য নাকি আলাদা এক জগৎ আছে।
গন্ধর্বলোক।
সেই সুরলোকের জগত থেকে এক অন্যমনস্ক গন্ধর্ব অপালা মিত্র পথ চলতে চলতেই হয়তো ছিটকে এসে পড়েছিলেন এই মর্ত্যলোকে।
কিন্তু ইট-কাঠের এই যে নোংরা, কঠিন, কদর্য পৃথিবী-- তাতে গন্ধর্বের ঠাঁই কি আর মেলে কখনো?

তানপুরা হাতে নিলেই অপালা মিত্র আর মনুষ্যলোকেই থাকতো না। গান ছিল তার শখ নয়, নেশাও নয়।
বলতে গেলে সমস্ত জীবন!
যদিও অকালে বাবা মারা যাবার পর থেকে সেই কিন্নরকন্ঠীর জীবনে সুখশান্তি, আরাম-আশ্রয়, অবসর.. বলতে গেলে ছিল না কিছুই।
নিঃসন্তান জেঠার পিতৃহারা দুই ভাইবোনের প্রতি দায়িত্ববোধ ছিল, ঘাটতি ছিল মমত্বে।
সেটা পুষিয়ে দেবেন কে, মা? কী দিয়ে?
এতবড় পৃথিবীতে এতখানি আকাশের নিচে নিরুপদ্রব একচিলতে ঘরের স্বাধীন আশ্রয় দেয়ার মতো সাধ্যও তো তার নেই।

অতএব অপালাকে বিএ পাশ করতে হয়, করতে হয় গোত্রবদল মানে বিয়েও। সুপ্রতিষ্ঠিত ছেলে,রাজপুত্রের মতো দেখতে, শুধু গান শুনে ঐ কালিন্দী মেয়েকে চেয়েছে ঘরে নিতে।
কার সাধ্য সে লোভনীয় প্রস্তাব ঠেকায়?
I don't want to be married just to be married!
I can't think of anything lonelier than spending the rest of my life with someone I can't talk to, or worse, someone I can't be silent with...

কিন্তু, চাইলেই কী আর সব পাওয়া যায়?

অতএব, অপালার, এরপরের জীবনচরিতে তারপর শুধু আসে মটরশুঁটির কচুরি তৈরির পাকপ্রণালী, এক অন্যমনস্ক বউ শুধু গুচ্ছের লোকজনের জন্য দিস্তে দিস্তে রুটি বেলে যায়, বছর বছর ছেলে কিংবা মেয়ের ভার বাড়ায় জনবহুল শহরে।
মধ্যরাতে স্বামীর শরীরসঙ্গীতের তারে নিজেকে গা পেতে বাজতে দিতে হয় যে।
না বলার সুযোগ কই, স্বামী তো।

সেখানে কো��া��় মীড়, কোথায় রাগ.. দরবারী কানাড়া কি তোড়ি?
ভালবাসা ঠুংরির মোচড়ের মতো, গজলের পুকারের মতো, সেতারের তরফের তারগুলোর ঝিনিঝিনি আওয়াজের মতো।

ক'জন বোঝে, কজন বুঝবে সেটা এমন করে?

আমি গানের মানুষ নই। গান শিখিনি কখনো, জানি না গাইতে।
এ বইয়ের অনেক কটা অংশ হয়তো ঠিকঠাক বুঝতেও পারিনি।

কিন্তু তারপরও অপালা দত্তগুপ্ত বড্ড মন ভিজিয়ে দেন। বারবারই...
Profile Image for Israt Zaman Disha.
193 reviews556 followers
March 30, 2017
বইটি শুরু করেছিলাম গত বছর। কিন্তু প্রথম কয়েকপেজ পড়ে রেখে দেই। কিছুদিন পর আবারও হাতে নেই। আবার কয়েকপেজ পড়ে রেখে দেই। এক ফ্রেন্ডকে বাণী বসুর বইগুলো আমিই দিয়েছিলাম। সে ২দিন আগে গান্ধর্বী পড়ছিল। আমাকে বলল, অনেক সুন্দর বই। আমি কেন পড়ি নাই। সেদিনই বাসে বসে বইটা পড়া শুরু করলাম। মন্ত্রমুগ্ধের মত পড়েছি। প্রথমে কেন ভালো লাগছিল না তার কারণও বের করেছি।

বইটি আসলে সঙ্গীত জগতকে কেন্দ্র করে লিখা। অপলা, সোহম, মিতুল সবার জীবন সঙ্গীতকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত। সঙ্গীত ওদের ধ্যান, জ্ঞান, ভালোবাসা। প্রথম দিকে সঙ্গীত বিষয়ক বর্ণনা পড়তেই ভালো লাগছিলো না। এত শক্ত শক্ত কথা কিছু বুঝিনি। কিন্তু পরে আর সমস্যা হয়নি। না বুঝলেও পড়তে ভালো লেগেছে।

বইয়��র কথা বলার মত কিছু নেই। বাণী বসুর বই নিয়ে আমি কিছু বললে সেটা ধৃষ্টতার পর্যায়ে পড়ে যাবে। তবে হ্যাঁ, এইরকম গভীর লিখা আমি কোনদিন পড়েছি বলে মনে পড়ে না। অনেক মানুষকেই আমি খারাপ ছেলে রিকমেন্ড করেছি, অনেককেই ধরে ধরে পড়িয়েছি। খারাপ ছেলেরও এত ডেপথ ছিল না। গল্পের চরিত্রগুলোর অনুভুতি যখন আপনি নিজে অনুভব করবেন তখনই তো গল্প বলা সার্থক। বাণী বসুর উপন্যাসের এক একটা চরিত্র যেন আপনার মনে গেঁথে যাবে। ওদের দুঃখ কষ্ট দেখলে আপনি হাহাকার করে উঠবেন। এইজন্যই বাণী বসুর লিখা এত প্রিয়।
Profile Image for Daina Chakma.
420 reviews713 followers
December 8, 2017
বই পড়া শেষ করার অনেকক্ষণ পরেও গল্পের ঘোর থেকে বের হতে না মুহূর্তগুলো আমার সবচাইতে পছন্দের। ব্যাপারটা যে হরহামেশা ঘটে এমনও না। আজ অনেকদিন পর সুরলোকের গল্প পড়তে গিয়ে নিজেই শব্দলোকে বাধা পড়েছি।

ফেসবুকের কোনো এক বুকস্টাগ্রামিং গ্রুপে পোস্ট করা চমৎকার একটা ছবি দেখে বইটার কথা প্রথম জানতে পারি। তখনই ঠিক করে ফেলি গান্ধর্বী পড়ে ফেলতে হবে। পড়তে গিয়ে এতোটা মোহাচ্ছন্ন হয়ে পড়ব এমনটা কল্পনাও করিনি।

সাহিত্য ঘরানার একটা পরিবার ঠিক কেমন হয় কিংবা সত্যিকারে গান পাগল মানুষগুলো আসলেই অপার্থিব জগতের কেউ কিনা জানার আগ্রহটা সবসময় মনের কুঠরিতে গুপ্ত ছিল। বলতে দ্বিধা নেই, বেড়ে উঠার সময় এমন একটা পারিবারিক আবহ না পাওয়ার জন্য চোরা একটা দুঃখও লালন করেছি অনেক দিন।

ঈশ্বর প্রদত্ত ক্ষমতা নিয়ে মর্ত্যের মাটিতে এসেও অপালা দত্তগপ্তের মতো সুরকন্যারা শুধুমাত্র মেয়ে হবার অপরাধে ঘরকন্না সামালাতে গিয়ে আস্তে আস্তে ঝরে যায়। যে কন্ঠের সুর কণের বিয়ের যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হয় এবং শেষ পর্যন্ত ইচ্ছের বিরুদ্ধে অসম্ভব সম্ভাবনাময় একজন "মেয়ে শিল্পী" কে বিয়ের পিড়ি বসতে হয়, বিয়ের পরে সংসারের হেসেল ঠেলতে গিয়ে সেই কন্ঠের পরিচর্যা করার সুযোগ আর ঘটেনা। অথচ গানই ছিল অপালার একমাত্র সাধনা আর ভালবাসা। অসম্ভব পবিত্র তার মন। তারচাইতেও পবিত্র সোহমের সাথে তার সম্পর্ক। অপালার ভাষ্যমতে সোহম তার গুরুভাই। প্রদ্যোতের সাথে তার যেমন রক্তের সম্পর্ক তেমনি সোহমের সাথে সম্পর্ক মরমের, শিক্ষা দীক্ষা আর রুচির। সোহম-অপালা যুগলের শিল্প জগৎকে অনেক কিছুই দেবার ছিল। অথচ মর্ত্যলোকের নিচু আর কুঠিল মানু্ষের দেয়া আঘাতে অভিমানী অপালার কন্ঠ রোধ হয়ে যায় চিরতরে।

মিতশ্রীর মত প্রখর ব্যক্তিত্বসম্পন্ন আর স্বাধীনচেতা হবার সুযোগ ঘটে কতজনের?! কঠোর পরিশ্রম মাঝেমাঝে প্রতিভাকেও হার মানাতে পারে সেটার উদাহরণ মিতুল। কর্কশ একটা কন্ঠকে সাধনার জোড়ে শ্রুতিমধুর করে তুলার দৃষ্টান্ত হাজারে হাজারে পাওয়া যায়না।

বাণী বসুর লেখনী নিয়ে কিছু না বলায় শ্রেয়। অসম্ভব শক্তিমান একজন লেখক তিনি। গানের রাগ-সুর না বুঝলেও গান্ধর্বীর সৌন্দর্য সুধা পান করতে সাধারণ একজন পাঠকের কোনো অসুবিধে হবেনা।
Profile Image for Riju Ganguly.
Author 36 books1,688 followers
November 20, 2022
মানবীবিদ্যা চর্চা নামের এক গালভরা বিষয় পড়ানো হয় বটে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার ক্লাসে মন দিয়ে নোট নেয় যারা, হয়তো তারাই পরে পণ চায় আর না পেলে অমানুষ হয়ে ওঠে। হয়তো তারাই স্ত্রী চাকরি করলে, বা অন্য কোনো ক্ষেত্রে গুণবতী হয়ে উঠলে ঈর্ষার সবুজ আগুনে ঝলসে দেয় সব।
আমাদের এই সমাজে যত ফুল ফোটে, তার মাটির নীচে থেকে যায় অজস্র মানহারা মানবীর স্বপ্ন, বা শরীর।
এই বইটি তেমনই এক মানবীর। আমরা সংসারে গৃহকর্মে নিপুণা লক্ষ্মীদের তবু কিছুটা কদর করি। কিন্তু সরস্বতী? তেমন নারী বোধহয় অভিশাপই কুড়োন।
যেমন কুড়িয়েছিলেন অপালা— এই গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র, এই কাহিনির গান্ধর্বী। ঈশ্বরদত্ত কণ্ঠ ছিল তাঁর, কিন্তু সেজন্যই তাঁর উপরে নেমে এসেছিল সংসার নামক বিচিত্র খেলায় সাপের মুখে বারবার পড়ে যাওয়ার ভবিতব্য।
তবে এমন কত গল্পই না লেখা হয় বাংলায়। এমন কত উপন্যাস পড়ে লোকে কেঁদে ভাসায়, তারপর বউকে গালি দিতে তৈরি হয়। এই উপন্যাস বিশিষ্ট হয়ে উঠেছে এর 'উপসংহার' অংশটির জন্য। ওই অংশটি আমাদে�� দেখিয়ে দিয়েছে, অন্ধ বালুচরে বন্দি সরস্বতী নতুন পথ ঠিক বেছে নেন মুক্তির জন্য!
বড়ো ভালো বই। মানবীবিদ্যার পাঠ্য বইয়ের বদলে এগুলো পড়লে, তথা অন্তর থেকে উপলব্ধি করলে হয়তো মানুষের মন বদলাবে। হয়তো সেভাবেই একদিন আমাদের এই গ্লানিময় অস্তিত্ব গন্ধর্বলোকের স্পর্শ পাবে।
ভরসা থাকুক।
Profile Image for Nusrat Mahmood.
593 reviews708 followers
November 26, 2017
গান্ধর্বী শেষ করেছি প্রায় এক সপ্তাহ আগেই। শেষ করবার পর মনে এত উথালপাতাল ছিল ভাবলাম যে একটু সময় নেই, নিজেকে সামলে নেই, শব্দ গুছিয়ে নেই। কারণ গল্পটা যে আমার খুব কাছের, প্রতিটা মেয়েরই বোধয় খুব কাছের। কিন্তু ব্যস্ততা- অব্যস্ততা- আলসেমিতে বেশি সময় নিলে যা হয় আর কি! সব বরং আরও ওলটপালট হয়ে গেল।

কথা বলবার আগে গান শিখতে গিয়েছি পাঁচ তলায় থাকা অরুণা আন্টিদের বাসায়। উদারা-মুদারা-তারার রিঙে হারমোনিয়াম তাই প্রানের খুব কাছের ছিল। পড়তে বসে গানের জলসায় অপালাকে বড্ড কাছের মনে হলো। বাণী বসুকে প্রথম চেনা এই বই দিয়ে। রিফাত আপুর বইয়ের ছবিতে দেখে হাতে নিয়েছিলাম, শেষ করে থম মেরে বসে ছিলাম অনেকক্ষণ। এ যে 'ঘর ঘর কা কাহিনী' বলেতে গেলে।

মেয়েদের স্বপ্নগুলো, প্রতিভার বিকাশ সব বড় আপেক্ষিক! হাজার হাজার সুযোগ থাকলেও নেবার ভাগ্য কতজনের? কারণ মেয়ে, তাই অনেক অভিভাবক। স্বামী দেবতুল্য কিন্তু দেবতুল্য স্বামীর সর্বদা পাশে থাকার, সবরকম ইচ্ছা পূরণে সবসময় আশ্বাস দেয়া দেখে বোধয় উপরে বসা দেবতাই হেসে কূল পাননা। তাই সহপাঠী-সহকর্মী বন্ধুটি শুধুমাত্র ছেলে হবার সুবাদে যেখানে গলা খুলে গান গেতে পারে সেখানে বাড়ির লোকের রসনা তৃপ্তির জন্য একদম টেন অন টেন কচুরি বা পটলের দোলমা তৈরি করে নিজের স্বপ্নের গলা চেপে ধরাটা আর রাতে বিছানায় শরীরের সুখ পাবার অভিনয় করে যাওয়াটাই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য।

অনেক কিছু শিখবার, শেখাবার জন্য অপালা যেন হাত পেতে বসে ছিল সমাজকে, নিজের সংসারকে, নিজেকে। কিন্তু মেয়ে তো! তাই স্বরের টুটি চেপে স্বরবন্দনা বন্ধ করলেন স্বয়ং বিধাতাই। আমার লাভের লাভ হলো অনেকদিন পর গানের প্রতি ভালবাসা, ছোটবেলার কথা ধরা গলায় ছড়িয়ে দিয়ে বসে থাকলাম আর এই অগোছালো শব্দে এখানে লিখে দিলাম। নাহ, বাণী বসুর বাকি লেখা সব না পড়লে চলবেইনা!
Profile Image for Nadia Jasmine.
186 reviews18 followers
October 18, 2020
‘গান্ধর্বী’ কাঁদায়। ভাবতে বাধ্য করায় যে অপালাদের চাওয়া-পাওয়া এখনো তুচ্ছ। পুরো বই জুড়ে রাগ-রাগিনীর অজস্র প্রকার ও নাম। এই বিষয়ে অকাট মূর্খ আমি খেই হারালেও ডুবে যাই অসাধারণ বর্ননারীতির সায়রে। পড়তে পড়তে পৃথিবীর সবাইকে অকাতরে দিতে থাকা অপালার জীবনটা টান মেরে সরিয়ে দিতে ইচ্ছে করে। পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় তার সাথে হতে থাকা অন্যায় থেকে মুক্তি দিয়ে তাকে নাজনী�� নাম্নী সেই ক্লাসিকালের তালিম দেয়া শিল্পীটির কাছে পাঠিয়ে দিতে ইচ্ছে করে। আর ভালো লাগে সোহমের মত্ততা ও সরলতা যা আবার রনোর মধ্যে ফিরে আসে। শুধু সুরে আশ্রয় খোঁজা অপালার নীরবতা যেন তার সইতে থাকা জীবনের অমোঘ পরিণতি হিসেবে আসে। আর ছোট্ট মিতুল তার চোটকে সাজিয়ে তোলে আলোয় আলোয়। সব ভ্রকুটি উপেক্ষা করে সত্যি সত্যি ডানায় ভর করে জীবন কাটায়, মিতশ্রী হয়ে ওঠে, তাও তাল না হারিয়ে। তিনজনই রামেশ্বরের শিষ্য-শিষ্যা, একে অপরের গুরুভাই। টানাপোড়েন জীবন থেকে গানে মিশিয়ে বানী বসু যা লিখেছেন তা কখনো পুরনো হবে না। অপালার আঁকা ছবিগুলোও লেখিকার রচনাগুনে আমরাও মনে মনে এঁকে ফেলি। পরতে পরতে এতো গভীরভাবে মানবচরিত্র বিশ্লেষণ দিন দিন বইয়ের পাতায় দুর্লভ হয়ে পড়েছে। বাণী বসু প্রতিবার মুগ্ধতা ছড়িয়ে তাঁর আরো লেখার সন্ধানে উৎসাহী করে তোলে।
Profile Image for Farzana Raisa.
477 reviews165 followers
June 24, 2020
মাই গড! মাই গড! মায়ায়ায়ায়াই গড!!

আমার কিচ্ছু বলার নেই! সুন্দর কোন সুর মানুষ যেমন মন্ত্রমুগ্ধের মতো শোনে, পথ ভুলে পৃথিবীতে চলে আসা তেমনই এক গন্ধর্বলোকের বাসিন্দাকে কেন্দ্র করে লেখা উপন্যাসটা পড়ে বিমোহিত হয়ে আছি।
সত্যি কোন কিছু বলার ভাষা পাচ্ছি না।
Profile Image for Shom Biswas.
Author 1 book46 followers
November 9, 2022
একটা মামারবাড়ি ছিল আমার। দাদু ছিল না, দাদু ডেড। দিদা ছিল। মুখচোরা, চুপচাপ, শান্ত। মায়ের পুরো উল্টোটা। মাসি ছিল, আবার ছিল'ও না। মানে মামারবাড়িতে ছিল না। মামারবাড়িতে তার নাম নেয়া হতো না। তিনটে মামা ছিল - বড়মামা সদাহাস্য, মিশুকে, লেগপুলং-প্রেমী ; মেজোমামা স্নেহময়, ক্রিকেটভক্ত, খাদ্যরসিক; ছোটমামা দীর্ঘকায়, রাশভারী, গীটারবাদক । সবাই পাঁড় মোহনবাগানী , সবাই হার্ডকোর বইপড়ুয়া ।

সে মামারবাড়ি আর নেই। সেও তো অনেকদিন হলো, অনেকদিন। গত সহস্রাব্দ থেকেই নেই। দিদা নেই, মাসি নেই, মেসোমশাই নেই। মা? মা'ও তো নেই।
মামারা আছে, মাসে -দু মাসে ফোন করি। কথা হয়। মামাতো ভাইবোনগুলো সব এক এক করে ব্যাঙ্গালোর হায়দ্রাবাদে চলে আসছে - মামারাও কখনো কখনো আসে এদিকে । দেখা হয়।
সবাই এখন বর্ষীয়ান। তিন মামাই যেন একে অন্যের মতন দেখতে হয়ে গেছে এখন। বাবা'কেও ওরকম'ই দেখতে লাগে । বুড়ো হয়ে গেলে পুরুষমানুষের সবাই কেমন যেন একই রকম দেখতে হয়ে যায়। মহিলারা তো কই হয় না। আমিও ওরকম'ই দেখতে হয়ে যাবো, বছর কুড়ি পরে।

যাহ , লিখতে গেলাম গান্ধর্বীর কথা, বেরিয়ে গেলো মামারবাড়ির গল্প। মামারবাড়িতে পড়েছিলাম গান্ধর্বী - তখন মামারবাড়ি বেচে দেয়ার কিছুদিন আগে - আমরা তখন কলকাতায় চলে এসেছি, আমি বোধয় এগারো ক্লাসে পড়ি। কোনো এক ছুটিতে মামারবাড়িতে এক দুপুরে শেষ করা বই। মনে আছে - হু হু করে কাঁদছিলাম পড়তে পড়তে। জিকো আমার মামাতো ভাই, তখন ছোট - বই টই পড়তো না, এখনো ব্যাটা বিজনেস-বই ছাড়া কিস্সু পড়ে না। কিন্তু জিকো'ও জানতো যে বই পড়তে পড়তে তো লোকে হাসেই, বই পড়তে পড়তে তো লোকে কাঁদেই। সাধারণ ব্যাপার। পড়ছি, জিকো এসে বললো - দাদা, বই পড়ে কাঁদা হয়ে গেলে বাইরে আয়, ক্রিকেট খেলবো। তারপর চলে গেলো।
কেমন উদ্ভট সব জিনিস মনে থেকে যায়।

ছোট্ট বই গান্ধর্বী - দারুন সুন্দর, মায়াবী একটা বই। গান বাজনা তো কিছু বুঝি না - এই তো গত মাসেই আমার বোন এসেছিলো ব্যাঙ্গালোরে, যাওয়ার সময় কুদরত রঙ্গিবিরঙ্গি তুলে নিয়ে চলে গেলো - বললো "দাদা তুই এসব আর কী বুঝবি, আমি নিয়ে যাচ্���ি" . কিন্তু গান্ধর্বী - সেই অপালা, সেই সোহম, সেই শাস্ত্রীয় সঙ্গীত - গান্ধর্বী তো বেশ বুঝতে পেরেছিলাম।
Profile Image for Amit Das.
171 reviews99 followers
December 3, 2022
'মানুষের যা কিছু নান্দনিক ক্ষমতা এবং বাসনা তার জন্য আছে এক আলাদা জগৎ। সে হলো গন্ধর্বলোক। সেখানে দেব গন্ধর্ব বিশ্বাবসু দেখেন সঙ্গীতামৃত সুরক্ষিত আছে কিনা, সেখানে সুর সৃষ্টি হয় মনের আনন্দে। সে লোক যেমন তালভঙ্গ সয় না, তেমন তালগর্বও সয় না।'


গান্ধর্বী

শুরুতেই বলে নিই, সঙ্গীতসাধনা নিয়ে এমন উপন্যাস এর আগে পড়া হয়নি আমার। ইতোপূর্বে বাণী বসু'র যে বইখানা পড়েছিলাম, তা পাঠের অভিজ্ঞতা বিশেষ সুখকর ছিল না। তাই গান্ধর্বী পড়ার আগে কিছুটা দ্বিধান্বিত যে ছিলাম না, সেটি বলা হবে নিতান্তই ভুল।
কিন্তু আমার সমস্ত দ্বিধা ও আশংকাকে এবার গুড়িয়ে দিলেন লেখিকা। একশো আটাশি পৃষ্ঠার এই উপন্যাসের প্রতি শাখা-প্রশাখা, অলি-গলিতে যেন সুরের সুমধুর এক মূর্ছনা এঁকে দিয়েছেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই গানবাজনার সাথে অল্পবিস্তর যোগাযোগ থাকার কারণেই কি না জানি না, একদম শুরু থেকেই একাত্ম হতে পেরেছি এ উপন্যাসের সাথে। বৃষ্টিধোয়া গন্ধরাজ ফুলের সুবাস যেমন রাঙিয়ে দিয়ে যায় ধূপছায়া রঙের সকালকে, তেমনি করেই যেন অনেকখানি মায়া মিশিয়ে সুরলোকের পটভূমিকায় গান্ধর্বী অপালা আর তার সুরসাধনার আখ্যানকে রাঙিয়ে দিলেন বাণী বসু।
গম্ভীর বিষাদ মাখা তানপুরার এই ঝংকার তাই হৃদমাঝারে বেজে চলবে আরো কিছুদিন-

'তুমি যদি সুখ হতে দম্ভ করহ দূর
প্রতিদিন তব গাথা গাবো আমি সুমধুর...'



(২৫.১১.২২)
April 3, 2023
হিন্দু মতে–  সঙ্গীত শাস্ত্রকে গন্ধর্ববেদ বলা হয়। কারণ, সঙ্গীতের সকল নিয়মকানুন গন্ধর্বরা সুচারুরূপে জানতেন এবং তাঁদের সঙ্গীতজ্ঞানকে বেদের মত অভ্রান্ত হিসাবে ধরা হতো।

অপালা মিত্র,ভারতীয় উচ্চাঙ্গসংগীতে অসম্ভব ভালো গায়িকা। তার গুরু রামেশ্বর মহাশয়ের সবচেয়ে প্রিয় শিষ্য।  অপালার ভাষ্য "গানের মতো সে আর কিছুকে ভালোবাসতে পারবে না পৃথিবীতে, এমনকি তার জীবন সঙ্গীকে ও নয়"। সত্যিই তা পারেনি। সুরলোকের মানুষ হয়ে, মর্তে মানব-মানবীকে ভালোবাসা অপালার কাজও নয়। সে সুরের পিয়াসি,সুরকে-ই ভালোবাসবে। কিন্তু অপালাকে প্রবেশ করতে হয়েছিল, সংকীর্ণ, ছোটলোকিতে ভরা মানবের সমাজে ঘেরাটোপে, এটাই তার ভবিতব্য ছিল....

বানী বসু-কে চিনেছিলাম,মহাভারতের সিরিজটার জন্য। এর পর লেখকের বেশ কয়েকটা বই এবং মহাভারত সিরিজটা সংগ্রহ করি। কিন্তু আমার দোড় ঐ সংগ্রহ করা অব্দি,পড়া আর হয়ে ওঠে না। এক বন্ধু আমাকে বেশ কয়েকবার বলেছিল " গান্ধর্বী " পড়ার জন্য। তখন পড়িনি। হঠাৎ কেন জানি ইচ্ছে হলো,পড়ার,তারপর শুরু করলাম। বেশ সময় দিয়েই পড়েছি বইটা। বানী বসুর লেখা দারুণ। আমি মুগ্ধ।

এই বই সংগীতের উপর ভিত্তি করে লেখা। পড়ার শুরু করার পর বুঝেছি,গান জিনিসটার "গ" ও বুঝি না। সুর,তল, লয় এসবের বিন্দু মাত্র জ্ঞান আমার নেই। যাকে বলে "কাঠ মূর্খ" ,সে হলাম আমি। তাও,পড়ে গেছি। আমার ভালো লেগেছে। এই বই সবার একটা বার অন্তত পড়া উচিত বলে মনে হলো শেষ করার পর।
Profile Image for Tisha.
377 reviews1,046 followers
February 4, 2018
গুডরিডসে কল্যাণে হঠাৎ করে খুঁজে পাওয়া একটি নাম গান্ধর্বী। রিভিউ সেকশনে রিফাত আপুর রিভিউ দেখে এতোই লোভ হয়েছিলো বইটি পড়বার যে নিজেকে আর আটকাতে পারি নি। দুমদাম করে ইবুক নামিয়ে এক বসায় পড়ে ফেললাম! বাণী বসুর লেখার সাথে পরিচয় এই গান্ধর্বী'র মাধ্যমেই।

বাণী বসুর লেখার সম্পর্কে নতুন করে কি বা বলবো। কি অসাধারণ লেখেন উনি! সেই শুরুর প্রতিযোগিতায় অপালার গাওয়া পুরিয়া কিংবা শেষের দিকে সোহমের সাথে যুগলবন্দী যেন পড়ছিলাম না আমি, শুনছিলাম নিজ কানে। গানের জন্য অপালার ভালোবাসা দেখে এক কথায় মুগ্ধ হয়েছি। নিজের জীবনে গানের জায়গায় অন্য কোন মানুষকে বসতে পারে নি সে শেষ পর্যন্ত!

গানের সঙ্গে কিছুটা পরিচয় থাকার সুবাদেই হয়তো বইটি একটু বেশিই বেশি ভালো লেগেছে। মিড়, খাম্বাজ, বিলাবল, ইমন, গান্ধার, নিখাদ সবই ভীষণ চেনা শব্দ!

অপালা ছাড়াও মিতুল নামে বোল্ড চরিত্রটি বেশ ভালো লেগেছে। তার চেষ্টাতেই দেরি করে হলেও অপালা এবং রামেশ্বর ঠাকুরের মনের ইচ্ছা ঈষৎ পূরণ হল বৈকি!

পুরোটা পড়েও মন ভরে নি, আরও পড়তে চাইছিলাম। কিন্তু মন এবং চোখ ভিজিয়ে বড্ড তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল গান্ধর্বী...
Profile Image for Musharrat Zahin.
341 reviews446 followers
August 23, 2021
অপলা, কণ্ঠে সুর নিয়েই জন্ম যার। তার পুরো জীবন জুড়েই যেন সুরের মূর্ছনা। গুরু রামেশ্বর ঠাকুরের শিষ্য সে আর সোহম, দুজনেই গুরুর প্রিয় শিষ্য। সোহম বেড়ে উঠেছে প্রাচুর্যের মধ্যে দিয়ে, অন্যদিকে অপলা বড় হয়েছে তার জ্যাঠার সংসারে। ওই সময় বাংলার মেয়েদের অবস্থা যা ছিল আরকি, ভালো কাজের সু্যোগ পেয়েও সংসারে থিতু হওয়ার কারণে অনেক কিছুই ত্যাগ করতে হতো। অপলাও তার ব্যতিক্রম নয়। তাই তো সঙ্গীত জগতের কিংবদন্তী নাজনীন বেগমের কাছে ঠুমরি, দাদরা, গজল শেখার অভূতপূর্ব সুযোগ পেলেও শেষমেশ তাকে শিবনাথের সংসারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অন্যদিকে তালিম নেওয়ার সুযোগ চলে যায় সোহমের কাছে।

সোহমের সবচেয়ে কাছের বন্ধু ছিল অপলা। তাই তো অপলার বিয়ের মাসখানেক আগে মিতুলের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিকারগ্রস্ত সোহম প্রচন্ড আক্রোশে মিতুলকে আঘাত করে। সেই চরম দুঃসময়ে অপালা এসে দাঁড়ায় সোহমের পাশে। হারমনিয়াম বাজিয়ে একটু একটু করে সারিয়ে তুলে সোহমকে।

গায়িকা হতে চাওয়ার স্বপ্ন যেন চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেল। এত অসাধারণ গানের প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও কেবল মেয়ে হওয়ার জন্য যে অপালাকে গান থেকে দূরে চলে গিয়ে শ্বশুরবাড়ির মন যোগানের জন্য সব ত্যাগ করতে হলো। বিয়ের পর অপলা স্বামী, সংসার, সন্তান নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেও সঙ্গীতকে ছাড়তে পারে না। কিন্তু এই সঙ্গীতই কি তার জীবনের কাল হয়ে দাঁড়াবে?

🌻


অসম্ভব সুন্দর একটা বই। প্রতি পাতায় যেন গানের মূর্ছনা। পড়া শেষে বেশ কয়েকদিন মন খারাপ ছিল। ভালো মানুষের রূপ ধরে থাকা স্বামীও যে কীরকম ভয়ংকর হিংস্র হতে পারে, শুধুমাত্র হিংসার বশবর্তী হয়ে, তা শিবনাথকে দেখেই বোঝা যায়। প্রতিটা চরিত্রই খুব যত্ন নিয়ে লেখা হয়েছে৷ সবচেয়ে সুন্দর ছিল সোহম আর অপলার সম্পর্কটা। তারা প্রেমিক-প্রেমিকা তো নয়ই, আবার ভাই-বোনও না, কিন্তু দুইজন দুইজনকে খুব ভালোমতো বুঝতে পারে। মিতুল আর দীপালীর কথা না বললেই না। মিতুল খুবই শক্তিশালী একটা চরিত্র। লেখক যেন অপলার মাধ্যমে দেখিয়েছেন গানের জগতকে, দেখিয়েছেন এক নারীর সংগ্রামকে।
Profile Image for Mahrufa Mery.
166 reviews107 followers
January 12, 2021
সংগীতসাধনা নিয়ে যে এত সুন্দর লেখা হতে পারে তা আগে ভাবতে পারিনি। এটি সঙ্গিত সাধনার প্রেক্ষাপটে রচিত একটি সামাজিক উপন্যাস। পিডিএফ এ ১২/১৪ পৃষ্ঠা পড়েই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম বইটা কিনেই পড়ব এবং সংগ্রহে রাখব। এটা যে সঙ্গীতের প্রেক্ষাপটে রচিত কাহিনী তাই এতে রয়েছে সঙ্গীত সাধনার জন্য সংগ্রামের কথাও। এটায় রেটিং ৪ তারা হতে পারত, কমিয়ে দিলাম কারন, মনে হল ইচ্ছা করলে এ উপন্যাসের বিস্তার আরো অনেক বড় হতে পারত। উপন্যাসের চরিত্র সংখ্যা হাতে গোনা তাই হয়তো অল্প পরিসরেই কাহিনী গুটিয়ে ফেলতে হয়েছে।

কাহিনী বিন্যাসের চেয়েও আমাকে টেনেছে এ উপন্যাসের চরিত্রায়ন। আরো স্পেসিফিকভাবে বলতে হলে- প্রতিটি চরিত্রের চিন্তা ভাবনা, মানসিক স্থিতি , ক্ষেত্র বিশেষে অনুভূতি ও অনুভূতির তীব্রতা সাবলিল বর্ণনার সাহায্যে যেভাবে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখিকা সেটিই আমার পড়ার গতিকে এক মুহূর্তও একঘেয়ে ফিল করতে দেয়নি। তবে চরিত্রায়ণ নিয়ে আমার একটা মতামত আছে, উপন্যাসের মূখ্য চরিত্র অপালার ক্যারেক্টার বিল্ডআপ ক্ষেত্র বিশেষে কিছুটা অবিশ্বাস্য লেগেছে, কারন যে টানাপোড়েণ এর মধ্যে দিয়ে শৈশব থেকে তাকে যৌবনে পদার্পণ করতে হয়েছে এবং সবকিছু মানিয়ে ঘরসংসার সামলাতে হয়েছে তাতে করে তার চরিত্রে ইনোসেন্সটা অস্বাভাবিকরকম বেশি মনে হয়। শিল্পিরা ইনোসেন্ট হবেন, সেটা স্বাভাবিক কারণ তারা সবকিছু ফেলে সঙ্গীত নিয়ে একধরণের সাধনার মধ্যে থাকেন, কিন্তু অপালা সারাজীবনই গৃহী পরিবেশে থেকে জীবন কাটানো মেয়ে। তাই তার মধ্যে এত ইনোসেন্স দেখানোটা একটু অবাস্তব ঠেকেছে আর সেকারণেই ক্ষেত্রবিশেষে তাকে একটূখানি ন্যাকাও মনে হয়েছে আর মনে হয়েছে তাকে যেন মানুষ হিসেবে জোর করে বাস্তবের চেয়ে বেশি উচুতে ওঠানো হচ্ছে।

স্পেসিফিক বিষয় নিয়ে লিখতে হলে জেনে বুঝে লিখতে হয় আর সেজন্য রিসার্চ প্রয়োজন। লেখিকা সেটি করেছেনও। যারা একেবারেই অজ্ঞ তাদের জন্য বাণী বসুর এই উপন্যাসে ভারতীয় ক্লাসিক গান বাজনা বোঝা বা আরো জানার জন্য অনেক রেফারেন্স পাওয়া যাবে।
Profile Image for Nighat.
20 reviews26 followers
February 14, 2017
কি পড়লাম, কি পড়লাম!
যেন পড়ি নি কেবল, জীবনে তাকে ধারণ করলাম।
সম্পূর্ণ মোহিত, আচ্ছন্ন।
এর চেয়ে মগ্ন হয়ে এ জীবনে আর কিছু পড়ি নি।
সমস্ত চৈতণ্যজুড়ে সুরময় আলাপে কখনও ঝনঝন, কখনও মৃদুমন্দে বেজে চলেছে একটাই অস্তিত্ব- অপালা দত্তগুপ্ত।
Profile Image for Md Shariful Islam.
258 reviews75 followers
November 6, 2020
হিন্দু পুরাণমতে মানুষের যাবতীয় সৃষ্টিশীল কাজ নিয়ন্ত্রিত হয় গন্ধর্বলোক থেকে। এমনই এক সৃষ্টিশীল কাজের কারিগর অপালা, যে গন্ধর্বলোক থেকে ভুল করে মানুষের দুনিয়ায় চলে এসেছে। গন্ধর্বলোকের বাসিন্দা এই গান্ধর্বীকে নিয়েই গড়ে উঠেছে উপন্যাসের কাহিনী যে গানের চেয়ে ভালো আর কিছুকে বাসে না, গান যার কাছে নেশা নয় বরং গান-ই যার কাছে জীবন।

পিতৃহীন অপালার ঠাঁই হয়েছে জেঠুর সংসারে। মা, দাদা প্রদ্যুৎ আর জেঠুকে নিয়ে তার পরিবার। ছোটবেলা থেকেই গান তার কাছে বিশেষ কিছু, পাড়ার সমস্ত অনুষ্ঠানে তার গান ছিল অবধারিত। এমন-ই এক অনুষ্ঠানে তার গান শুনে তাকে শিক্ষার ভার নেয় রামেশ্বর ঠাকুর। বাড়ির বিশেষ করে জেঠুর নানা ধরনের আপত্তি সত্ত্বেও গান শিখেই চলেছে সে। কিন্তু স্থানীয় এক প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়ে সে যখন লখনৌতে নামকরা এক শিল্পীর কাছে শেখার সুযোগ পেল তখন আর অনুমতি মিলল না তার, উল্টো তার গান শুনে মুগ্ধ হওয়া এক চাকুরের সাথে তার বিয়ে দিয়ে দিল জেঠু। আকাশসম স্বপ্ন যেন আচমকা মাঠিতে নিক্ষিপ্ত হলো কিন্তু হার-না-মানা অপালা কি এতেই থেমে যেতে পারে? সমান্তরালভাবে চলেছে তার গুরুকন্যা মিতুল এবং অপর গুরুভাই সোহমের গানের জগতে সংগ্রামের কথা। কিন্তু একজনের লড়াইয়ের থেকে অপরজনের লড়াইয়ের কোনোই মিল নেই কেননা জীবন যে একেকজনকে নিয়ে একেকভাবে খেলে!

আমি গানের মানুষ না। বলতে গেলে গানের অ,আ,ক,খ পর্যন্ত বুঝি না। কিন্তু একেবারে যে গান শোনা হয় না তা তো আর না। তাইতো সেটুকু থেকেই বুঝি গান কিভাবে মানুষের ভালোবাসা, বিরহ, আনন্দকে ফুটিয়ে তুলতে পারে। আবার গানের মানুষদের দেখে অনুমান করতে কষ্ট হয় না গানের প্রতি তাদের সাধনা বা ভালোবাসার। উপন্যাসের মূল থিমটাই যেহেতু উচ্চাঙ্গসংগীত, তাই স্বাভাবিকভাবেই গান সম্পর্কিত অনেককিছুই বুঝতে পারি নি। নানা ধরনের সুর, তাল, লয়, যন্ত্রের কথা না বুঝলেও লেখিকা যা বলতে চেয়েছেন তা বুঝতে তেমন কোনো সমস্যা হয় নি৷ কেননা গানের ক্লাস তো আর তিনি নেন নি, তিনি অপালা, সোহম আর মিতুলদের মাধ্যমে দেখিয়েছেন গানের জগতকে, দেখিয়েছেন এক নারীর সংগ্রামকে।

বইয়ের প্রধান চরিত্র অপালা। পুরো বইটাই আবর্তিত হয়েছে তাকে কেন্দ্র করে। ওর মাধ্যমেই লেখিকা আমাদের পরিচয় করিয়েছেন গানের অদ্ভুত মোহময় এক জগতের সাথে। অপালা দেখিয়েছে কিভাবে গানকে ভালোবাসতে হয়, গানের জন্য সাধনা করতে হয়, গান কিভাবে শিল্পীর অন্তরকে দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। কিন্তু দ্বিতীয় অংশটা আরও গুরুত্বপূর্ণ। কেননা গানের জন্য এক নারী তথা অপালার সংগ্রাম-ই তো বইয়ের মূল বিষয়। এত অসাধারণ মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র মেয়ে হওয়ার জন্য যে অপালাকে গান থেকে দূরে চলে গিয়ে রুটি আর তরকারি কাটতে বসতে হলো সেটা তো বইয়ের প্রধান ফোকাস। সোহম কিস্তু তার চেয়ে বেশি মেধাবী ছিল না কিন্তু উচ্চশিক্ষার সুযোগ পায় সে-ই। আর অপালাকে তখন রাতে স্বামীর সঙ্গ দিতে হয়, দিনে শ্বশুর-শ্বাশুড়ির মন যুগিয়ে চলতে হয়। কিন্তু প্রকৃত শিল্পীরা যে এখানে থেমে যায় না বরং শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও যে তাদের প্রতিভা বিকশিত হয় অপালার চরিত্রের মাধ্যমে সেটাও দেখিয়েছেন লেখিকা। অপালা তো আসলে এক নীরব অভিমানী বিপ্লবী যে স্বামীর, ছেলের, সংসারের দেওয়া সব দুঃখ ভুলেছে গানের কাছে গিয়ে, আর গান যখন তার দান ফিরিয়ে নিয়েছে তখন চিত্রের মাধ্যমে।

সোহম আর অপালার অদ্ভুত সম্পর্কটা বইটাকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে। ঠিক প্রেমিক-প্রেমিকার নয় আবার ভাই-বোনেরও নয় এমন একটা সম্পর্ক যেখানে একে অপরের কাছে হৃদয়ের জানালা খুলে কথা বলা যায়, একে অপরের মনের কথা বোঝা যায় প্রকাশের আগেই। মিতুল চরিত্রটাও বেশ ইন্টারেস্টিং ছিল। নিজেই নিজের পরিচয় তৈরি করা, প্রতিভাহীনতাকে পরিশ্রমের মাধ্যমে পরাজিত করা, নিজেকে দুর্বোধ্য করে রাখার লড়াই – সবমিলিয়ে ভালো লাগার মতো একটা চরিত্র। এই তিন নায়কের ভীড়ে জেঠুকে বা শিবনাথকে ভিলেন মনে করা অসম্ভব না, কিন্তু তাদের জায়গা থেকে ভাবলে খুব বেশি দোষও দেওয়া যায় না তাদের।

সম্পূর্ণ নতুন ধরনের একটা বই পড়লাম। বইটা শুধু চরিত্রদের নিয়েই এগোয় নি, গানের একটা মোহ ছড়িয়ে গিয়েছে পুরো বইটা জুড়ে। তাইতো বইটা পড়ার সময় মনে হচ্ছিল যেন জবরদস্ত কোন শিল্পীর গাওয়া গান শুনছি, সর্বদা তানপুরা, তবলা, সেতারের টুংটাং যেন শুনতে পাচ্ছিলাম বইয়ের পাতা থেকে!
Profile Image for Chandreyee Momo.
157 reviews26 followers
December 13, 2023
বইটা যে খুব বিশাল তা নয়। কিন্তু এই বইয়ে কত দ্রুত অথচ সহজে আমরা কতগুলো জীবন দেখি। আস্তে আস্তে গল্প কিভাবে এগোতে থাকে। গানের সাথে ভালবাসায় সিক্ত জীবন। অপালা, সোহম, মিতশ্রী, রামেশ্বর ঠাকুর, শিবনাথের জীবন। কি সুন্দর, ক্ষণে ক্ষণে একরকম বিষন্নতার আবার আনন্দের চাদরে আকাঁ এক উপন্যাস। সাথে সঙ্গীতের গভীরে চলে যাওয়া।
অসাধারণ একটা বই।
Profile Image for Nusrat Jahan.
65 reviews29 followers
December 12, 2018
"গান্ধর্বী"! এ যেন পরতে পরতে মিশে থাকা পারীর সুগন্ধ,ঠুমরীর মোচর, "সাপনোমে আবে পিয়া"। অপালা হচ্ছে সুরলোক থেকে পথভুলে মর্ত্যে চলে আসা গান্ধর্বী,সংসার যার তানপুরার সাথে সে মনুষ্যপ্রেমে কি করে ভুলে?মুদ্রা,কটকি,সুরের আলাপ,পেখোয়াজ মিলে সুরেলা "গান্ধর্বী",ধরা-ছোঁয়ার বাইরের সুর।হৃদয়কে মন্থির করা,ভিজিয়ে তোলা সুর।বেহাগের পকড়,তড়ানা,তিলং,ঠুংরি-হামাগুড়ি দিতে দিতে ছুটে আসছে সুর,ফেনা তুলে আছড়ে পরছে তীরে..
"না তীরথ মে,না মুরত মে,মে তো তেরি পাস মে"
Profile Image for Shotabdi.
660 reviews117 followers
November 6, 2020
বাণী বসুর লেখার সাথে পরিচয়টা আমার এমনিতেই মধুর। এই বইটি আরো অনেক বেশি মধুর করল সেটা। গান নিয়ে এমন একটি বই, এমন হৃদয়ছোঁয়া সম্পর্কের গল্প লেখা সহজ কথা নয়৷ পুরোটা গল্পই টানটান, এমন একটি বই হাত থেকে রাখা যায় না৷ কেবল পড়তে ইচ্ছে হয়েছে অপালা, সোহম, মিতুলের গল্প।
অনুভূতি এবং গান হাত ধরাধরি করে যেন মরমে প্রবেশ করলো। অসাধারণ এক মুগ্ধতার জন্ম দিয়ে গেলো আর চিনিয়ে গেলো আরো কিছু গোপনতাকে।
Profile Image for Maleeha Tarannum.
44 reviews1 follower
September 27, 2019
'গান্ধর্বী' নামটা পড়ে ভিরমি খেয়ে গিয়েছিলাম, ভেবেছিলাম- যেই বইয়ের নামই এমন কঠিন, সেই বই না জানি কত কঠিন। কিন্তু মোটেও না, বইটা খুবই সোজাসাপ্টা করে লেখা। শুধু যেসব জায়গায় উপমা বা মনের ভাব বোঝাতে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত সম্পৃক্ত শব্দের ব্যবহার হয়েছ, ওসব জায়গা একটু আন্দাজ করে বুঝে নিতে হয়েছে। গন্ধর্ব মানে সুরদেবতা আর সুরের জগত হচ্ছে গন্ধর্বলোক। এই গল্পটার মূলে গন্ধর্বলোক দেখেই গল্পের নাম 'গান্ধর্বী'। গল্পের মূল চরিত্র অপল��� নামের এক অসামান্য প্রতিভাধর সঙ্গীতশিল্পী যার সারা জীবনের সাধনা আর ভালবাসা ছিল 'গান'। কিন্তু বাস্তব খুবই রূঢ়, Life is unfair! জীবনের এই 'unfair' দিকটা এই গল্পে লেখক এত চমৎকার করে তুলে ধরেছে যে পড়তে গিয়ে মনে মনে বলেছি, "কেন জীবন এমন পাষণ্ড?!"

এই জগৎসংসারে বহু পুরুষ আছে যারা বিয়ে করে বউয়ের ওপর 'স্বামীত্ব' ঠিক-ই ফলায় অথচ বউয়ের পাশে ন্যায়সঙ্গত কারণে দাঁড়াবার সৎ সাহসটুকু পর্যন্ত এদের নেই। আবার, ঘরে 'সাদরে; বরণ করে নেয়া হবে এমন 'সাদাসিধে' মেয়েকে তাদের বিয়ে করতে ইচ্ছে হয় না এদের, তখন 'প্রতিভাবান' মেয়ে তাদের চাই। এইসব পুরুষেরা আসলে বউপিটানো কাপুরুষগুলোর চেয়ে কম ক্ষতিকারক নয়। 'গান্ধর্বী'-এর একটা ক্লাইম্যাক্স এমন এক পুরুষকে নিয়েই, পুরোটা বইয়ে এই মানুষটার জন্য আমার তীব্র বিদ্বেষ কাজ করেছে।

বাংলা বই পড়ায় যাদের অনাগ্রহ নেই, তাদের জন্য এই বইটা অবশ্যই পড়া দরকার। এই বইয়ে সঙ্গীতের ভাঁজে খুলতে খুলতে লেখক আমাদের আটপৌরে জীবনের নানা জটিলতা স্বচ্ছন্দে তুলে ধরেছেন- অনাথ হওয়ার জটিলতা, অন্যের দারস্থে জীবন কাটানোর জটিলতা, প্র��িভাবান হওয়ার জটিলতা- প্রতিভাবান না হওয়ার জটিলতা, বাবা-মা আর সন্তানের মাঝে দূরত্ব থাকার জটিলতা, ভালোবাসার জটিলতা-ভালোবাসা হারাবার জটিলতা। এই বইটা আমার খুব প্রিয় হয়ে থাকবে।
Profile Image for Sayan Raha.
26 reviews44 followers
May 20, 2015
পড়ে ফেললাম বাণী বসুর আরো একটি লেখা।আজকেই বইপোকার এক বন্ধু জয়দীপের সাথে আলোচনা হচ্ছিল এই বইটি নিয়ে।বাণী বসুর লেখা মৈত্রেয় জাতক এবং উপন্যাস পঞ্চক পড়ার পরে এতটাই ভক্ত হয়ে পড়েছিলাম ওনার লেখার যে এই বইটা তো পড়তে হতোই আমায়।ছোটোবেলা থেকে গানবাজনা শুনতে ভালবাসলেও কোনো রাগ খেয়াল বুঝতাম না বা উচ্চমার্গ এর সঙ্গীতকলাও সেরকম কিছু জানি না,বিশেষ জ্ঞান নেই আমার এই বিষয়ে।তবুও খুব ভাল লাগলো বইটি।
গন্ধর্বদের স্থান স্বর্গে,তাঁরা শিল্পকলায় অসামান্য।কিন্তু এই মর্ত্যলোকেও আমাদের আসেপাশে এইরকম অনেক গান্ধর্ব এবং গান্ধর্বী আছেন যাদের আমরা শ্রদ্ধা করি, ভালবাসি।এই বইয়ের চরিত্রগুলিও সেরকম।কথায় আছে গন্ধর্বরা মনের আনন্দে তাদের শিল্পীসত্তার জাগরণ ঘটান।তবে কথায় এও আছে যে কোনো ভাবে তারা যদি তাদের শিল্পীসত্তার অপমান করেন বা অবহেলা করেন তার ফলও বড়ো ভয়ানক হয়।
সুরলোকের পটভূমিকায় লেখা এই গল্পের মুখ্য চরিত্র হলো অপালা নামের একজন নারী।যিনি দেবদত্ত কন্ঠের অধিকারিণী।আর অপালার পাশে রয়েছে বেশ কিছু চরিত্র দীপালি,রামেশ্বর,সোহোম,মিতুল।দুরন্ত নিটোল একটি মূল কাহিনীর সাথে বেশ কিছু উপকাহিনী জুড়ে দিয়ে একটি অসামান্য বই পাঠকদের জন্য।
বন্ধুরা অবশ্যই পড়ে দেখো।

আনন্দ পাবলিশার্স।
মূল্য: ১৫০ টাকা।
Profile Image for Abu Saleh Musa Patoary.
40 reviews26 followers
June 22, 2020
এই উপন্যাসকে পরিপূর্ণভাবে বোঝা আমার সাধ্যের বাইরে। উপন্যাসের অনেকটা জায়গা জুড়ে আছে উচ্চাঙ সঙিতের আলোচনা। আমি প্রদ্যোৎ এর মত আব্দুল করিমের গলায় বিড়ালের কান্না শুনতে না পেলেও, আমার জ্ঞান "গোড়ালি বাজালেই কথ্থক" এর সমতুল্য। কিন্তু আমার অপারগতার কারণে এই লেখাকে আমি খাটো করতে পারবো না।অপালার মত কত নারীই যে স্বামীর হাতে নিয়মিত ধর্ষিতা হয়।অপালা অসম্ভব প্রতিভাম​য়ী ছিল বলে সকল কাঁটা ধন্য করে সে ফুটেছিল​। কিন্তু কতজনের যে সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বিবাহের জাঁতাকলে প​ড়ে সারাজীবন "রাঁধার পরে খাওয়া, আবার খাওয়ার পরে রাঁধা" করেই কেটে গেল​।কজনেরই বা একটা মিতুল আছে।
Profile Image for Denim Datta.
371 reviews21 followers
October 26, 2014
অসাধারণ গল্প|
সুরলোকের পটভূমিকায় লেখা এই উপন্যাসের কেন্দ্র অপালা নামের দৈবিক কন্ঠধারিনী|

Rifat Sanjida এর review থেকে নিচের লাইনটা নিলাম, একই অনুভূতি আমারও :

"আমি গানের মানুষ নই। গান শিখিনি, জানি না গাইতে। এ বইয়ের অনেক কটা অংশ হয়তো আসলে ঠিকঠাক বুঝতে পারিনি। কিন্তু তারপরও অপালা দত্তগুপ্ত বড্ড মন ভিজিয়ে দেন।"

5+*
Profile Image for Naima Ferdous.
15 reviews7 followers
March 31, 2020
মানুষের যা কিছু নান্দনিক ক্ষমতা এবং বাসনা তার জন্য আলাদা জগৎ আছে।তার নাম গন্ধর্বলোক। আমি গানের মানুষ নই তবুও দারুণ মুগ্ধতা নিয়ে বইটি শেষ করেছি। নিঃসন্দেহে অপ্রতিম বর্ণনাশৈলী। শিল্পীরা অন্য মানুষের থেকে সম্ভবত সত্যিই একটু অন্যরকম হয়ে থাকেন.. আসলেই...
February 27, 2021
পাঠ প্রতিক্রিয়া
বইয়ের নামঃ গান্ধর্বী
লেখকঃ বাণী বসু
ধরণঃ সামাজিক-পারিবারিক উপন্যাস
প্রথম প্রকাশঃ ১৯৯৩
প্রকাশনীঃ আনন্দ পাবলিশার্স
মোট পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৮৮

গন্ধর্বলোকেরই বাসিন্দাদের বলা হয় গান্ধর্বী। তেমনই এক মনুষ্যরূপী গান্ধর্বী অপালা দত্তগুপ্ত, যার সুমধুর কণ্ঠ ও সুরের মূর্ছনায় আপ্লুত হতো দর্শক শ্রোতারা। সঙ্গীত জগতকে কেন্দ্র করে যার একান্ত ধ্যান-জ্ঞান, সে কীকরে কাদামাটির মর্ত্যের হিংসা, দ্বেষ, ইচ্ছে-অনিচ্ছে কিংবা সিদ্ধান্তের অবমাননা, এমনকি সংসারজীবনের গৎবাঁধা জীবনের মাঝে নিজের ঠাঁই খুঁজে নিয়েছিলো তারই আখ্যান এই “গান্ধর্বী” উপন্যাসটি।

সত্যি বলতে, উপন্যাসটি শুরু করার আগে ভেবেছিলাম বেশকিছু অতিনাটকীয় ঘটনার মধ্য দিয়ে যেতে হবে বুঝি। কিন্তু তা নয়, বরং কাহিনীবিন্যাস ও চরিত্রের চিত্রায়ণ যেন বেশ সাবলীল ও সহজ-সাধারণ। ছা-পোষা মধ্যবিত্ত পরিবারের পিতৃহারা অপালার পারিবারিক পরিমণ্ডলে রয়েছেন তার মা, জেঠু এবং দাদা প্রদ্যোৎ। রাশভারী জেঠুর শাসনে-বারণে জীবন আবদ্ধ হলেও অপালার মন-প্রাণ জুড়ে ছিল গান, সুর ও ছন্দ। জীবনকে কোনদিনও সাংসারিকতার বাঁধনে বাঁধার পরিকল্পনা ছিলোনা তার, বরং তালিম নিতে চেয়েছিলো বিখ্যাত সঙ্গীতসাধক নাজনীন বেগমের কাছে।

স্বপ্ন বুঝি অধরাই থেকে গেলো! আর ��ট দশটা মেয়ের মতোই সংসারের ছকে আবদ্ধ হল অপালা। যে হাতে হারমোনিয়াম, সেতার বা বীণার সুললিত ঝঙ্কার বেজে উঠতো, সে হাতেই পরিবেশন হতে লাগলো চা-কচুরি ইত্যাদি। হয়ত এমনই হবার ছিলো, যেখানে সুরের সংগ্রাম-সাধনা থেকে ক্রমশঃ দুরে সরে যেতে হচ্ছিলো অপালাকে। এ যেন নক্ষত্র বিচ্যুতি থেকেও কোন অংশে কম নয়!

কিন্তু যার ধ্যান-জ্ঞানের সবটা জুড়েই গান, সেই সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত গুণাবলী নিয়ে কি অপালা সত্যিই পিছিয়ে যেতে পারে? মোটেই নয়।
অপালা দত্তগুপ্ত একজন অসম্ভব সৃষ্টিশীল, পবিত্র, গোছানো একজন মানবী। অপালা স্বল্পভাষী ঠিকই, কিন্তু সুরের অনুপ্রবেশে ঠিকই স্বতঃস্ফূর্ত হতো তার মনের দেয়াল। অপালা সহজ, সাবলীল, সাধারণ ঠিকই, কিন্তু সেই সাধারণত্বের মাঝে কোথায় যেন এক নান্দনিক অসাধারণত্বের আল্পনা এঁকেছেন খোদ বাণী বসু নিজেই। যা ভাষায় প্রকাশ করা যায়না, অনুভব করে নিতে হয়।

হ্যাঁ, উপন্যাসে হয়ত বাণী বসু দেখাতে পারতেন একজন কণ্ঠশ্রমিক হিসেবে অপালার বিশ্বজয়, কিন্তু তিনি দেখিয়েছেন এক রূঢ় অথচ সাবলীল বাস্তবতা, যা হৃদয়মনকে বারবারই আর্দ্র করে। মন যেন বারবারই ছুটে যেতে চায় অপালার কাছে, জানতে আরো ইচ্ছে হয় সঙ্গীতের সুমধুর রাগ, সুর, তাল, লয় সম্পর্কে তার অভিব্যক্তি! কিংবা এও প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হয়, অপালা দত্তগুপ্ত কি সত্যিই সাবলীলতার আচ্ছাদনে মোড়ানো একজন অভিমানিনী?

উপন্যাসের আরো চরিত্রের মাঝে আমাকে ভীষণভাবে টেনেছে মিতশ্রী ওরফে মিতুলের স্বাধীনচেতা ও দৃপ্ত ব্যক্তিত্ব! সোহমের শিক্ষা ও রুচির বহিঃপ্রকাশের তারিফ করতে হয়। দীপালীর চরিত্রটি আংশিক নেতিবাচক হলেও কাহিনীর প্রয়োজনে তা বেশ সহজ ও সাবলীলই মনে হয়েছে। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে থেকে যাবেন গান্ধর্বলোকের সেই উজ্জ্বল নক্ষত্র অপালা দত্তগুপ্ত।

বাণী বসুর লিখনশৈলী নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই। “একুশে পা” পড়ামাত্রই তাঁর ভক্ত হয়ে গিয়েছিলাম নিমেষেই। অসম্ভব সৃজনশীল একজন লেখিকা তিনি, যাঁর লেখার প্রতিটি পরতে পরতেই থাকে জ্ঞানার্জনের সুযোগ। গান নিয়ে তেমন ধারণা না থাক�� সত্ত্বেও উপন্যাসটি পড়ে ধারণা হয়েছে বেশ, কেননা লেখিকা প্রতিটি বিষয় নিয়েই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে গবেষণা করেছেন, আর সেই সঙ্গীতের আচ্ছাদনেই সামাজিক-পারিবারিক ঘরানায় আচ্ছাদিত করেছেন গোটা উপন্যাসটি। কোন বাহুল্যতা নেই, নেই কোন অতিরঞ্জন। মেদহীন প্লটে অপালার জীবনের ছক বুনতে বুনতেই যেন হুট করে ফুরিয়ে গেল “গান্ধর্বী’’, কিন্তু ফুরোয়নি এর রেশ।

রেটিংঃ ৪/৫ 🌼
Profile Image for Shanin  Hoque .
26 reviews29 followers
July 15, 2021

গান্ধর্বী - বাণী বসু
ঘরানা : উপন্যাস

বাণী বসু রচিত 'গান্ধর্বী' যন্ত্রে বাঁধা কিছু জীবনের গল্প বলে। সে যন্ত্র কলকব্জার তৈরি নিতান্ত কর্কশ কোনো যন্ত্র নয় ; সে যন্ত্রে সুধাময় সুর-ছন্দ ঝরে অবিরত।

পৌরাণিক বিশ্বাস অনুযায়ী,
মানুষের যাবতীয় সৃষ্টিশীল-নান্দনিক ক্ষমতা এবং বাসনার উৎপত্তিস্থল - গন্ধর্বলোক। সেই গন্ধর্বলোকের সুরকন্যা অপালা মিত্র-ই এই উপন্যাসের গান্ধর্বী তথা মুখ্য চরিত্র। অপালা ছাড়াও সঙ্গীত জগতকে কেন্দ্র করে রচিত এই উপন্যাসটি জুড়ে আছেন রামেশ্বর ঠাকুর,মিতশ্রী ঠাকুর, সোহম চক্রবর্তী,নাজনীন বেগম,দিপালি,দিলীপের মতো আরো ক'জন সংগীত আঁকড়ে বাঁচা মানুষ। তবে,বাণী বসু কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছেন সেই অপালাকে যিনি গন্ধর্বলোক থেকে দুর্ভাগ্যক্রমে এসে পৌঁছেছিলেন এই যান্ত্রিক পৃথিবীতে।এই পৃথিবী শৃঙ্খলতায় বিশ্বাসী-কঠোর বাস্তবতায় বিশ্বাসী- যান্ত্রিকতায় বিশ্বাসী এখানে সেতারের ঝংকার-তানপুরার সুরের ততটা মূল্য নেই যতটা গন্ধর্বলোকে আছে।এ পৃথিবীর সাধারণ ছা-পোষা মানুষদের ইমন কল্যাণ কিংবা আশাবরী শোনবার সময় নেই কিংবা তিলক কামোদে মুগ্ধ হবার ক্ষমতা নেই।তাই, দেবদত্ত কণ্ঠাধিকারিণী অপালা মিত্র-ও পাননি যথাযথ মর্যাদা ; পাননি নিজেকে বিকশিত করবার সুযোগ।অসামান্যা হয়েও যাপন করতে হয়েছে নিতান্ত সামান্য - সাধারণ জীবন।এই উপন্যাস সেই নিদারুণ ঘটনার-ই আখ্যান।উপন্যাসের পাতায় পাতায় ফুটে উঠছে এক প্রতিভাময়ী সংগীতশিল্পী অপালা মিত্রের অপালা দত্তগুপ্ত পরিচয় নিয়ে সাধারণ গৃহবধূতে পরিণত হবার গল্প, অন্যমনস্ক হয়ে একগুচ্ছ লোকজনের জন্য দিস্তে দিস্তে রুটি বেলার গল্প, ঠুংরির মোচড়ের মতো, গজলের পুকারের মতো, সেতারের তরফের তারগুলোর ঝিনিঝিনি আওয়াজের মতো ভালোবাসা না পাবার হতাশার গল্প,অপারগ হয়ে সংসারধর্ম পালনের গল্প,জনবহুল শহরে বছর বছর ছেলে কিংবা মেয়ের ভার বাড়ানোর গল্প,আপোস করতে করতে ক্লান্ত হয়ে উঠার গল্প। তবুও,সবটা আলো তো একেবারে নিভে যায় না কোথাও না কোথাও গিয়ে টিমটিমে আলোর দেখা মেলে। অপালাও বহুবছর পর সেই আলোর সন্ধান পেয়েছিলো ; তবে সে আলোয় অপালা উদ্ভাসিত হতে পেরেছিলো নাকি অপালা পৌঁছুবার আগেই আলোটুকু দপ করে নিভে গেছিলো তা জানতে পড়ে ফেলতে হবে অসামান্য এই উপন্যাসটি।


সংগীতসাধনাকে কেন্দ্র করে যে এত অপূর্ব একটা উপন্যাস লিখে ফেলা যায় তা আমার কল্পনাতীত ছিলো।আমি অবাক বিস্ময়ে এই বইটা পড়েছি।সঙ্গীতের সঙ্গে আমার অনেক বছরের পরিচয়। তাই, ছোটখাটো কিছু বিষয় ছাড়া গোটা উপন্যাসটি বুঝতে তেমন কষ্ট হয়নি আমার। আমার জীবনে পড়া অন্যতম সুন্দর বই এটা। আমার যদি ক্ষমতা থাকতো এ কে পাঁচ তারার বেশি দিতাম! আমি আশা করবো, যারা সংগীতপ্রেমী এবং বইপ্রেমী তারা এই বইটি অন্তত একবারের জন্যে হলেও পড়বে। 🖤
56 reviews18 followers
October 1, 2019
What a book! what a book!

I am just bowled out!! Story, language, characters.......cant say enough!!
It's still lingering in my head.
We use the word passion so many times in life. Bani Basu has very successfully described what real passion is, what it could do.
When a person has real passion for anything it goes to a different level.

Not saying much with the excerpts from the novel because of spoiler.....one has to read it to realise what the book actually is.

It's a must read for anybody who can read the language!!
Profile Image for Dhiman.
58 reviews5 followers
June 1, 2024
অপালা তোমাকে ভালবাসি!❤️
Profile Image for Protyasha Paul.
3 reviews20 followers
May 6, 2022
Typical.
I had literally waited for the perfect moment to get started on this book while I took a few moments off my schedule to admire the cover illustrations every now and then... disappointed
The plot runs too fast, without putting many insights into the characters; time frame not well structured.
However, the book still manages to provide good deal of information that would certainly fascinate music enthusiasts :)
Displaying 1 - 29 of 29 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.